ভবঘুরে লজ্জা
সন্ধ্যাবতীর আলতা লাগে না। ভাঙা চুড়ি মাড়িয়ে যায় সে,কোমল চামড়া কেঁটে রক্ত বেরোয়। সে রক্তে আলতারাঙা হয় পা জোড়া।
ভবঘুরে চটিজোড়া ছুড়ে ফেলে নদীস্রোতে। হেঁটে যেতে চায় কাঁচের টুকরো মাড়িয়ে। খড়া পায়ে দাগ কাটে না। ভবঘুরের ভীষণ কষ্ট হয়,সন্ধ্যাবতীর যন্ত্রণা যে অনুভবে এলো না..!!
মাটিতে রাঙা পায়ের ছোপ ছোপ দাগ। ভবঘুরে সে দাগ অনুসরণ করে। ঐ তো,ঐ তো সন্ধ্যাবতী..!! নদীর জলে স্নান করতে নামছে। ভবঘুরে পাড়ে এসে দাঁড়ায়,চোরের মত।
সন্ধ্যাবতী শাড়ির আঁচল খোলে,শ্যামলা দেহ সূর্যাস্তের আলোয় কালচে-রংয়া হয়। প্রেমদেবী জলে ডুব দেয়। ভেজা দেহের অর্ধেকটা জলের ওপর ভেসে ওঠে। ভবঘুরের দেহরক্তে জোয়ার আসে,হাতখানা গোলাপঝাড়কে শক্ত করে ধরে। রক্তের ধারা বের হয়,সেদিকে খেয়াল আসে না।
সূর্য ডুবছে,আকাশ রক্তবর্ণ সজ্জায় সজ্জিত। সন্ধ্যাবতী ডুব দিয়েই চলেছে। ভাটার টানে এগিয়ে যাচ্ছে সন্ধ্যাবতী,একজোড়া চটি ভেসে এলো কোথা হতে যেন। চটিজোড়া হাতে নিলো সে,ছেঁড়াখুরো রং ক্ষয়ে যাওয়া। চারদিকে মালিকের খোঁজে তাকায় সন্ধ্যাবতী।
ভবঘুরের গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে আসে। সন্ধ্যাবতী কি জানে,চটিজোড়া কার,এর অতীত?
ভবঘুরে ভীষণ ভয় পায়,সন্ধ্যাবতী যদি জানতো..!! এ যে নির্বাক প্রেমিকের লজ্জ্বা।
ভীষণ লজ্জ্বা..!!
Comments
Post a Comment