একুশ বোধ

আজ একুশ বছর পরে হঠাৎ করে খেয়াল করলাম,আমি ভীষণ একটা শূন্যতার মাঝে হাঁটছি। চারপাশটায় শুধু সীমাহীন প্রান্তর। বছর দুয়েক আগেও যে প্রান্তরটা শোরগোলে বেজায় পরিপূর্ণ ছিলো,সেখানে এখন একটা ঐশ্বরিক প্রতিশোধ নেচে নেচে বেড়াচ্ছে। 
 
আমার কোনো অভাব ছিলো না। অভাবহীন সময়ে বিপরীত এক লিঙ্গ বলেছিলো,"এভাবে সবাইকে অবহেলা করো না। একদিন সবাইকে তো দূরের কথা,কাউকেই কাছে পাবে না।" আমি তাচ্ছিল্যভরে হেসেছিলাম। ভাগ্যবতীর ভাগ্য ফিরেছে,ভবিষ্যৎবাণীও ফলেছে।

ঠিক যেন জনমানবশূন্য একটা দ্বীপে আটকে আছি। চারপাশে অথৈ পানি অথচ আমি পান করতে পারি নে। আমার কোনো ক্ষুধা নেই আজকাল,ভীষণভাবে শুকিয়ে যাচ্ছি। বহুদূরে জাহাজ ভেসে যায়,আমি চিৎকার করি,তারা সে ডাক শুনতে পায় না। সে জাহাজে কারি কারি স্বর্ণমুদ্রা,আমার তাতে কোনো ভাগ নেই।

মাঝে মাঝে ভ্রম ঘটে। মনে হয়,কেউ যেন উড়ে উড়ে আমার পাশে এসে বসেছে। সে মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। মিষ্টি স্বরে বলে,"এবার চোখ মেলো,তোমার আর কোনো যন্ত্রণা নেই।"

আমি ধীরে ধীরে চোখ মেলি। ভারী সুন্দর একখানা মুখ। "এ যে ভাগ্যদেবী..!!"

যখন ভ্রম কাটে,দেখি 'ভাগ্যদেবী' নামের কেউ-ই আসে নি। আমি ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদি। অনেকদিন তো হলো,পাপ কি কাটা যায় নি?

আমার ধারণক্ষমতা এখন প্রায় শূন্য। প্রতি পূর্ণিমায় আশায় থাকি,ভাগ্যদেবী ফিরবেন। ফিরিয়ে দেবেন সবকিছু। অন্তত ভাগ্যবতীর মতো কাউকে দিয়ে বলবেন,"অনেক তো হলো,এ বেলা একটু গল্প করো।"
চাঁদ প্রতিবার ক্ষয়ে যায়,আমার ধৈর্য্যশক্তির সীমাও ক্ষইতে থাকে। একসময় হয়তো প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে উঠবে। প্রলাপ বকতে বকতে হঠাৎ করে হাওয়ায় মিলিয়ে যাবো।
 
আর ভাগ্যদেবী? তারা বোধহয় ছলনাময়ী-ই হন..!!

Comments

পোস্টটির দর্শক সংখ্যা-

সমস্ত পোস্টের তালিকা-

অনলাইনে আছেন-

4k এর অধিক পাঠকের জন্য অগনিত শুভেচ্ছা। সাবস্ক্রাইব করতে পারেন-


Free Updates to your Inbox
Follow us:
facebook twitter gplus pinterest rss