ভবঘুরে প্রান্তর

উত্তরের হিমেল ঝড়ো হাওয়া কানে বরফ জমিয়ে দেবে,সূচের মত ঝিরিঝিরি বৃস্টির ফোঁটাগুলো আমার মুখে এসে বিধঁবে।
আমি জানি,আমার গরম কাপড়গুলো ততক্ষণে ভেজা বস্তার মতো হয়ে গিয়েছে। হয়তো সর্দি-জ্বর লাগতে বসে গিয়েছে। নিউমোনিয়াও বাঁধতে পারে। তবুও আমি আবার এমন একটা রাত্রি চাইবো। সাথে চাইবো তোমাকে।
হয়তো তুমি সেই মুহূর্তে উষ্ণ ঘরে বসে গনগনে চিমনির সামনে তাপ পোহাচ্ছো। আমার পাগলামি তোমার কাছে অনর্থক লাগবে।
তবু আমি চাইবো তুমি একবার আমার পাশে হেঁটে দেখো এ রাত্তিরে। একবার আমার কনুইটা শক্ত করে ধরে দেহটাকে সঁপে দাও শীতের হিমেল হাওয়ায়। মেঘে ঢাকা নিশ্চুপ পৃথিবীতে শুধু গাছগুলোর কালো অবয়ব হিমেল বাতাসে মৃদু কাঁপে। সে গাছগুলোর মতই তোমার দেহও কাঁপছে। আমি তোমার ঠোঁটের কাঁপন দিব্যি দেখতে পাবো।
তুমি বোধহয় আসবে না। আমি নিশ্চিত,তাতে জোর করবোনা। আমার কথা বলার সত্যিই কেউ নেই। আমি তোমার জানলার ধারে গিয়ে কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থাকবো। দেখবো তুমি কতটা রাত জাগো।
জানলাটা তখন মনের ভুলে খুলবে কি একবারও? একবারও কি ভাববে যে ওধারে কেউ ছিলো? যদিওবা খুলেই ফেলো,কি করবে তখন? গল্প করবে? আমার না গল্প করার মত কেউ নেই। শুধু গল্প করার জন্য হলেও একজন 'তুমি' চাই।
আমার কোনো 'তুমি' নেই। এ শহরের প্রতিটা কানাগলি আমার চেনা। যে শহরে তুমি থাকো সে শহরটা আমার জন্য নয়।
তাই,আমি এরকম একটা রাত্রিতে যেতে চাই সীমাহীন কোনো প্রান্তরে। প্রান্তরের তীরগুলো ছেয়ে থাকবে বিশালাকার ঘন গাছে। সামনে থাকবে ঢেউ-গর্জনের জলপ্রান্তর। সেদিক থেকে জলের ছেঁটা আমার শরীর ভিজিয়ে দেবে। তীব্র শীতে কাঁপতে কাঁপতে আমি হাসবো। চিৎকার করে হাসবো।
কেননা এ প্রান্তরে আমার সে হাসি কেউ শুনতে পাবে না।
Comments
Post a Comment