পুনর্মিলন

আজও চিঠি লিখছি ঠিক সেই জায়গাটিতেই বসে,যেখান থেকে একসময় তুমি আমায় লিখতে। সেই নির্ধারিত সময়,প্রতি মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬ টা,মেট্রো রেলের সিটে।
ট্রেন ছুটে চলেছে বুদাপেস্ট থেকে। জানো কি,আজ বেশ তুষার পড়ছে..!! এমনটা হওয়ার কথা ছিলো না। ঘন জঙ্গল ঢাকা পড়ে গেছে বরফের চাদরে।
হাতের গ্লাভস দিয়ে জানলার কাচটা ঘষে দিলাম। বাইরে শ্বেতশুভ্রতা ছাড়া কিছুই চোখে পড়ছে না। দিব্যি কল্পনা করতে পারি,একসময় ঠিক এরকম পরিবেশের মাঝ দিয়েই রেল ছুটতো শহরের এমাথা হতে ওমাথা,আর তুমি সেই দীর্ঘযাত্রায় অতিকায় সব চিঠি লিখতে আমায়।
আমি চিঠিগুলো সব হারিয়ে ফেলেছি। এখন তো আর তুমি চিঠি দাও না। দারুণ একটা অভাব বোধ করি। একসময়ের অবহেলায় ফেলে দেয়া জিনিসগুলোও পুরোনো হয়ে গেলে সম্পদে পরিণত হয়। এখন শুধু আমিই চিঠি লিখি,কিন্তু ডাকবাক্সে পোস্ট করি না। ও কাজ করলে পোস্টম্যান নিশ্চিত আমায় পাগল ঠাওরাবে। তাই নিজের চিঠি নিজের হাতেই তোমার কাছে পৌঁছে দিই।
আজ বেশিক্ষণ থাকতে পারবো না। ফিরে যেতে হবে জলদি। ট্রেন হুইসেল দিচ্ছে,বোধহয় এসে গেছি। হাতের গ্লাভস দিয়ে আবার ঘষে দিলাম জানলার কাঁচে। ঐ তো,দেখা যাচ্ছে..!!
হ্যাম্পস্টেডের গীর্জায় তোমার কবরখানা দিব্যি দেখতে পাচ্ছি।