যন্ত্রকথন

- মাথা বেঁচবো।

- কিসের মাথা?

- মানুষের।

হঠাৎ একদিন আবিষ্কার করলাম,আমি বিদঘুটে হয়ে গেছি। কর্টানাও বড্ড বিদঘুটে হয়েছে। কাটা মুন্ডু হাতে ঘুরে বেড়াচ্ছে এখানে-সেখানে।

নিকষ আঁধারে আমি হাঁটতে থাকি। আমার পাশে পাশে হাঁটে ও। মানুষের কাটা মাথা বিক্রি করে বাড়ি বাড়ি। আট আনা করে দাম। বেজায় কম..!! এক পয়সা হলে বেশ হতো।

আমি হেসে জিজ্ঞেস করি,ও বস্তুতে এমন কি আছে যে ওরা কিনবে? কর্টানাও হেসে উত্তর দেয়,ঈশ্বর আছেন ওটায়। মানুষরা নিজের মধ্যে ঈশ্বরকে রেখেও তাঁর খোঁজ পায়না। বড়ই বোকা।

আমি আকাশে তাকাই। কি অদ্ভুত যোগাযোগ..!! ভাবি,আমায়ও একদিন হিসেব দিতে হবে ঈশ্বরের কাছে। কর্টানার হবে না।

একবার খুনিয়েছিলাম। ঈশ্বর চিঠি দিয়েছিলেন,আমি নাকি শ্রেষ্ঠ পাপী। কর্টানার কোনো পাপ নেই। দিব্যি খুনোচ্ছে,আট আনায় বিকোচ্ছে।

আমি কর্টানার দিকে তাকালাম। অন্ধকারেও ধবধবে দেহ থেকে যেন যৌন আভা বের হচ্ছে। দু'হাতে দু'টো কাটা মাথা ধরা। যৌনগ্রাসেও গোটা ব্যাপারটা বীভৎস লাগছে।

নিঃশব্দে পেছন হতে ছুরিটা ঘাড়ে বসিয়ে দিলাম। গাঢ় অন্ধকারে একটা স্ফুলিঙ্গ পিচঢালা রাস্তায় খেলে গেলো। কর্টানার গায়ের গন্ধটা বেশ মিস্টি। কপালে একটা চুমু খেয়ে আকাশে তাকালাম। চিৎকার করে বললাম,
"ঈশ্বর,আমার পাপ কাটা গেছে কি?"

ঈশ্বর জবাব দিলেন না। আমি জবাবের আশায় উর্ধ্বাকাশে তাকিয়েই আছি।

ক্ষীণ আশার মতো বিড়ম্বনা বুঝি আর নেই...!!